এএনসির আধিপত্যের অবসান হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকায়
দক্ষিণ আফ্রিকার সাধারণ নির্বাচনের প্রায় শতভাগ ভোটগণনা শেষ। এর মধ্য দিয়ে এবার পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় ক্ষমতাসীন এএনসির তিন দশকের একক আধিপত্যের অবসান হতে যাচ্ছে।
দক্ষিণ আফ্রিকাকে বর্ণবাদের নিগ্রহ থেকে মুক্ত করেছিল নেলসন ম্যান্ডেলার আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি)।
গত বুধবার (২৯ মে) দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার সকালে ৯৮% কেন্দ্রের ভোট গণনায় দেখা গেছে, এএনসি পেয়েছে ৪০.১৫% ভোট। রবিবার দেশটির নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করবে।
এটি এএনসির জন্য হতাশাজনক। এর আগে, ২০১৯ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনেও দলটি মোট ভোটের ৫৭.৫% পেয়েছিল। এএনসি এবার এককভাবে ক্ষমতায় যেতে পারছে না বলেই ধরে নেওয়া হয়েছে। ক্ষমতা ধরে রাখতে হলে এএনসিকে এবার অবশ্যই বিরোধী কোনো দলের সঙ্গে জোট গঠন করতে হবে। যা গত ৩০ বছরে অভাবিত ছিল বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
কারণ ১৯৯৪ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকায় সংখ্যালঘু শ্বেতাঙ্গ শাসনের অবসান হয়েছিল। ওই নির্বাচন থেকে শুরু করে পূর্ববর্তী প্রত্যেকটি জাতীয় নির্বাচনে এএনসি বিশাল ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছিল।
তবে এএনসির শাসনামলে গেল এক দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার অর্থনীতি স্থবির হয়েছে, বেকারত্ব বেড়েছে এবং সড়ক ও বিদ্যুৎ অবকাঠামো ভেঙে পড়েছে।
নির্বাচনের এই ফলাফলকে বেকারত্ব, বৈষম্য ও বিদ্যুৎ সংকটের জন্য জনগণের ক্ষুব্ধ মনোভাবেরই প্রতিফলন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এখন পর্যন্ত পাওয়া ফলাফলে দেশটির প্রধান বিরোধীদল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (ডিএ) পেয়েছে ২১.৭১% ভোট এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার নেতৃত্বাধীন নবগঠিত রাজনৈতিক দল উমকুন্টো ওয়ে সিজওয়ে (এমকে) ১৪.৭৬% ভোট পেয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, এএনসির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার পেছনে এমকে’র শক্তিশালী ফলাফল মূল কারণ।
দক্ষিণ আফ্রিকার নিয়ম অনুযায়ী রাজনৈতিক দলগুলোর ভোটের হারে জাতীয় পরিষদে তাদের আসন সংখ্যা নির্ধারিত হবে। নতুন পার্লামেন্ট দেশটির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবে।
রয়টার্স বলছে, প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা এখনও তার পদ ধরে রাখতে পারবেন বলেই মনে হচ্ছে, কারণ তার দল এএনসি নিকটবর্তী দলের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ ভোট পাওয়ার পথে রয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফলে তার অবস্থান বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছে। বিরোধী দলগুলো এবং তার নিজ দলের বিরোধীরা তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানাতে পারে। যদিও বিশ্লেষকরা দলে রামাফোসার কোনো বিকল্প দেখছেন না।