সুদানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফের সংঘর্ষে অন্তত ১০০ জন নিহত

সুদানের গেজিরা প্রদেশের একটি গ্রামে বুধবার আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) হামলায় অন্তত ১০০ জন নিহত ও কয়েক ডজন আহত হয়েছেন।

দারফুর প্রদেশের গভর্নর মিনি আরকো মিনাওয়ি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটারে) জানিয়েছেন, গেজিরার ওয়াদ আল-নুরা গ্রামে আরএসএফের হামলায় নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু ও বৃদ্ধ রয়েছেন।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথেরিনা রাসেল এক বিবৃতিতে বলেন, এসব হামলায় অন্তত ৩৫ শিশু নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছে।

গেজিরার রাজধানী শহর ওয়াদ মাদানির বাসিন্দাদের রক্ষায় গঠিত তৃণমূল পর্যায়ের একটি গোষ্ঠী বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছে, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সুদানের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করা আধাসামরিক বাহিনীটি ওই গ্রাম ঘেরাও ও আক্রমণ করতে ভারী কামান ব্যবহার করেছে।

অতীতে আরএসএফের হুমকি ও হামলার শিকার হওয়া মাদানি প্রতিরোধ কমিটি বুধবার সকালে শুরু হওয়া হামলার মধ্যে ওয়াদ আল-নুরা লুটপাটের জন্য আধাসামরিক বাহিনীকে অভিযুক্ত করেছে।

গত ডিসেম্বরে আরএসএফ দাবি করে, তারা সুদানের রাজধানী খার্তুম থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ওয়াদ মাদানির নিয়ন্ত্রণ নেয়।

প্রতিরোধ কমিটি বলেছে, আরএসএফ গ্রামটিতে হামলা চালিয়ে নারী ও শিশুসহ বাসিন্দাদের আল-মানাকিল জেলার অন্যান্য অংশে বাস্তুচ্যুত করেছে।

সুদানের অন্তর্বর্তী সরকার তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে এক বিবৃতিতে এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে এবং আরএসএফকে জবাবদিহি করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

২০১৯ সালে দীর্ঘকালীন রাষ্ট্রপতি ওমর আল-বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করার পরে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ক্রান্তিকালীন সার্বভৌমত্ব পরিষদের মিডিয়া অফিস বলেছে, ‘এগুলো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড, যা বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করা, তাদের সম্পত্তি লুণ্ঠন এবং তাদের এলাকা থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার ক্ষেত্রে এই (আরএসএফ) মিলিশিয়াদের পদ্ধতিগত আচরণকে প্রতিফলিত করে।’

বুধবার রাতে এক্সে আরএসএফ অভিযোগ করেছে, সুদানের সামরিক বাহিনী আল-মানাকিল জেলার পশ্চিমে জাবাল আল-আউলিয়ায় ৩টি ঘাঁটিতে সুদানের সশস্ত্র বাহিনীকে একত্রিত করে তাদের সেনাদের ওপর হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছে।

আধাসামরিক গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, তারা ওয়াদ-আল নুরার পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণের ৩টি শিবিরে হামলা চালিয়ে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

আরএসএফ তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘আমাদের বাহিনী শত্রুর কোনো আন্দোলন বা সমাবেশের সামনে অলসভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে না এবং শত্রুকে অনুসরণ ও পরাজিত করার জন্য কাজ করবে।’

সুদানে জাতিসংঘের আবাসিক ও মানবিক সমন্বয়কারী ক্লেমেন্টাইন এনকোয়েতা-সালামি বৃহস্পতিবার এক্সে বলেন, সহিংস হামলার খবরে তিনি ‘মর্মাহত’।

তিনি বলেন, ‘মানবিক ট্র্যাজেডি সুদানে জীবনের একটি বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা দায়মুক্তির আরেকটি উদাহরণ হতে দিতে পারি না।’

এক বিবৃতিতে এনকোয়েতা-সালামি বলেছেন, জনবহুল এলাকায় ভারী গোলাগুলি ও বিস্ফোরক অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি হামলার জবাবদিহি ও তদন্তের আহ্বান জানান।