গাজায় প্রাণহানি ছাড়ালো ৩৭ হাজার
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরো ২৮৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৩৭ হাজার। ইসরায়েলের এই হামলায় নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরো ৮৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
সোমবার বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান আক্রমণে নিহত ফিলিস্তিনের সংখ্যা কমপক্ষে ৩৭ হাজার ৮৪ জনে পৌঁছেছে বলে রোববার অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, আট মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এই হামলায় আরও ৮৪ হাজার ৪৯৪ জন আহত হয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী গাজা উপত্যকায় পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে আটটি গণহত্যা চালিয়েছে। যার ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮৩ জন শহিদ এবং আরো ৮১৪ জন আহত হয়েছেন।
মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, গত শনিবার কেন্দ্রীয় গাজা উপত্যকার নুসিরাত ক্যাম্পে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চালানো ইসরায়েল দখলদার বাহিনীর হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৭৪ জনে পৌঁছেছে। বর্বর ওই হামলায় আরো ৬৯৮ জন আহত হয়েছে, যার মধ্যে গুরুতর আহতরাও রয়েছেন।
শনিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা কেন্দ্রীয় গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে মারাত্মক হামলা চালিয়ে চার বন্দিকে উদ্ধার করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, অনেক সংখ্যক ভুক্তভোগী মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকে রয়েছেন এবং অ্যাম্বুলেন্স ও সিভিল ডিফেন্স ক্রুরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।