রাখাইনের রাজধানী দখলে রাখতে মানুষকে ঢাল বানাচ্ছে মিয়ানমার জান্তা

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিটওয়ের মূল সড়ক

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিটওয়ে শহর নিয়ন্ত্রণের প্রায় দ্বারপ্রান্তে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। এ কারণে সেখানে সাধারণ মানুষকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে জান্তা সরকার। এক প্রতিবেদনে এ বিষয়টি তুলে ধরেছে সংবাদমাধ্যম ইরাবতি।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, রাখাইন রাজ্যের পুরো উত্তরাঞ্চল নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে আরাকান আর্মি। তারা রাজধানী সিটওয়ের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে।

মিয়ানমার ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক এক বিশেষজ্ঞ দ্য মিরর এশিয়াকে বলেছেন, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইনের মংডু টাউনশিপ এলাকাটি হারালেই জান্তার কাছ থেকে সিটওয়ে দখল করা হবে আরাকান আর্মির জন্য শুধুই সময়ের ব্যাপার।

গত ফেব্রুয়ারিতে রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য উত্তর রাখাইনের শহর কিয়াউকতাও এবং সিটওয়ে টাউনশিপের দুটি প্রধান সেতু উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে মিরর এশিয়াকে সূত্র জানিয়েছে; এর উদ্দেশ্য ছিল আরাকান আর্মিকে আটকানো, যাতে তারা রাজধানীর দিকে অগ্রসর হতে না পারে।

সিটওয়ের চারপাশ সমুদ্র দ্বারা বেষ্টিত। এক্ষেত্রে আরাকান আর্মির জন্য আক্রমণের একমাত্র উপায় হলো জলপথ।

সিটওয়ে নিজেদের কব্জায় রাখতে জান্তা সরকার যে সেখানে সাধারণ মানুষকে ‘মানব ঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করছে এটি দ্য মিরর এশিয়া যাচাই করতে পারেনি। তবে দ্য অল আরাকান স্টুডেন্টস অ্যান্ড ইয়ুথস কংগ্রেস (এএএসওয়াইসি) মঙ্গলবার (১১ জুন) এক বিবৃতিতে বলেছে, সিটওয়ের উত্তরে ১২টিরও বেশি গ্রামের বাসিন্দাদের সোমবারের মধ্যে তাদের বাড়িঘর ভেঙে ফেলার এবং তাদের গ্রাম ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, জান্তা সরকার এই লোকদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার জন্য রাখাইনের রাজধানীতে চলে যেতে বাধ্য করছে।

গত বছরের নভেম্বরে আক্রমণ শুরুর পর থেকে আরাকান আর্মি এরইমধ্যে সেখানকার ১০টি টাউনশিপের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। রাখাইন রাজ্যে মোট ১৭টি টাউনশিপ রয়েছে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী মিয়ানমারের চিন রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলীয় পালেতোয়া টাউনশিপও দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি।