ফিলিস্তিনিদের জন্য প্রার্থনা ও ত্রাণ পাঠিয়ে এশিয়াজুড়ে মুসলিমদের ঈদুল আজহা উদযাপন
ইসরায়েলি আগ্রাসনে মানবেতর জীবনযাপন করা গাজার ফিলিস্তিনিদের কল্যাণ কামনা ও তাদের জন্য খাবার পাঠানোর মাধ্যমে সোমবার এশিয়ার মুসলমানরা ত্যাগের উৎসব ঈদুল আজহা পালন করছে।
নবী ইব্রাহীম (আ.)-এর বিশ্বাস ধারণ করে ঈদুল আজহার নামাজ এবং গবাদি পশু জবাই ও গরীবদের মাংস বিতরণের মাধ্যমে সারা বিশ্বের মুসলিমরা দিনটি পালন করে থাকে। এটি এমন একটি কল্যাণকর উৎসব, যেদিন সামর্থ্যবান মুসলমানরা পশু কিনে সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশে উৎসর্গ করেন এই মাংসের দুই-তৃতীয়াংশ দরিদ্রদের মধ্যে বণ্টন করে থাকেন। সৌদি আরবে হজযাত্রার চূড়ান্ত অনুষ্ঠানের সঙ্গে এই দিনটি মিলে যায়।
ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভারত ও বাংলাদেশসহ এশিয়ার বেশিরভাগ অঞ্চলে সোমবার ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে। তবে সৌদি আরব, লিবিয়া, মিশর ও ইয়েমেনসহ বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তের মুসলমানরা একদিন আগে (রবিবার) ঈদ উৎসব পালন করেছে।
সোমবার (১৭ জুন) ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় মুসল্লিরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঈদের নামাজে অংশগ্রহণ করেন। ঈদের জামাতের আগে বক্তৃতায় ইমমরা গাজা ও রাফায় যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি মুসলিমদের কল্যাণ কামনায় সবাইকে প্রার্থনার আহ্বান জানান।
দক্ষিণ জাকার্তার একটি ইদগাহ ময়দানে ঈদের নামাজ পড়ার পর আদি প্রাসেত্য নামের একজন বলেন, ‘ফিলিস্তিনে কষ্টপীড়িত ভাই ও বোনদের প্রতি আমার প্রার্থনা ও সমবেদনা রয়েছে। দাতব্য সংস্থার মাধ্যমে এখন সেখানে সাহায্য পাঠানোর অনেক উপায় আছে।’
বেরলিনা ইয়ুস্তিজা নামের আরেকজন বলেন, ‘আল্লাহ যুদ্ধবিধ্বস্তদের শক্তি দিন। যারা আত্মীয়দের ছেড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন, তারা যেন শান্তিতে বসবাস করতে পারে।’
বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি মুসলমান থাকলেও ইন্দোনেশিয়ার ঈদুল আজহার ঐতিহ্য অন্যান্য ধর্মের দ্বারা প্রভাবিত।
হজরত ইব্রাহিমের অটল বিশ্বাস এবং আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের প্রকাশ হিসেবে নিজের ছেলে ইসমাইলকে উৎসর্গ করার ইচ্ছার কথা স্মরণ করিয়ে দেয় ঈদুল আজহা। তবে ইসমাইলকে কুরবানি করার আগমুহূর্তে আল্লাহ একটি ভেড়া পাঠান। এই গভীর ভক্তি ও ত্যাগের মহিমায় প্রতি বছর ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়।
এদিন ঈদুল ইজহা উদযাপন করছে ভারতের মুসলমানরাও। দেশটির মোট জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ মুসলিম।
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির ঐতিহাসিক জামা মসজিদে ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করেন হাজার হাজার মুসল্লি। সকাল থেকেই মসজিদ প্রাঙ্গণ লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। এসময় তারা একে অপরের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং নামাজ শেষে কোলাকুলি করেন।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ১৭ কোটি জনসংখ্যার দেশ বাংলাদেশেও ত্যাগের মহিমায় ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে। যুদ্ধ-বিগ্রহ বন্ধ হয়ে একটি শান্তিপূর্ণ বিশ্বের প্রত্যাশায় দেশের মুসলমানরা ঈদের নাজাম আদায় করেছেন।
দিনটি উদযাপনে আল্লাহর উদ্দেশে সারা দেশে লাখ লাখ গবাদি পশু কোরবানি দেওয়া হচ্ছে।