ইসরায়েলের গোলান মালভূমিতে ‘হিজবুল্লাহর’ হামলায় ১২ কিশোর নিহত

ইসরায়েল অধ্যুষিত গোলান মালভূমিতে একটি ফুটবল মাঠে রকেট হামলায় অন্তত ১২ কিশোর নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাকে দায়ী করেছে ইসরায়েল।

শনিবার (২৭ জুলাই) সূর্যাস্তের ঠিক আগে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তের মাজদাল শামসের দ্রুজ শহরের একটি উপত্যকায় এই হামলার হয়।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের লড়াই শুরু হওয়ার পর থেকে এই হামলাটি দেশটিতে সবচেয়ে বড় ও প্রাণঘাতী হামলা।

ইসরায়েল হিজবুল্লাহকে দায়ী করলেও সশস্ত্র গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে এই হামলায় তাদের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করা হয়েছে।

এদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সতর্ক করে বলেছেন, ‘এই হামলার জন্য হিজবুল্লাহকে চড়া মূল্য দিতে হবে।’

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর প্রধান মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর এটি ইসরায়েলের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। এ ঘটনায় আরও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ টেলিভিশন চ্যানেল ১২-কে বলেন, ‘হিজবুল্লাহ এখানে সব রেড লাইন অতিক্রম করেছে- এতে কোনো সন্দেহ নেই। এর জবাবে তারই প্রতিফলন ঘটবে। একটি সর্বাত্মক যুদ্ধের খুব কাছাকাছি চলে এসেছি আমরা।’

এদিকে, হিজবুল্লাহর প্রধান মুখপাত্র মোহাম্মদ আফিফ বলেছেন, তারা মাজদাল শামস শহরে হামলা চালানোর কথা সুস্পষ্টভাবে অস্বীকার করছে। হিজবুল্লাহ সাধারণত কোনো হামলার কথাই অস্বীকার করে না।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে সফররত নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, ঘটনার খবর শুনে যুক্তরাষ্ট্র সফর সংক্ষিপ্ত করবেন ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট। তবে তিনি কবে (দেশে) ফিরবেন তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।

নেতানিয়াহু ফেরার পর ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা বৈঠকে বসবে বলে জানানো হয়েছে।

ইসরায়েল সরকারের কট্টর ডানপন্থী সদস্যরাও হিজবুল্লাহকে কঠোর জবাব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে তা হলে গাজায় প্রায় ১০ মাস ধরে চলা লড়াইয়ের পর হামাসের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে ইসরায়েল।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দক্ষিণ লেবাননের চেবা গ্রামের উত্তরের একটি এলাকা থেকে রকেটটি ছোড়া হয়।

চ্যানেল ১২-এ প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, দ্রুজ শহরের একটি উপত্যকায় বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটে। এর কিছুক্ষণ পর ফুটবল মাঠ থেকে স্ট্রেচার নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সের দিকে ছুটছেন প্যারামেডিকরা।

১৯৬৭ সালের যুদ্ধে সিরিয়া থেকে এই উপত্যকাটির দখল নেয় ইসরায়েল। দ্রুজে কিছু ইসরায়েলি নাগরিক রয়েছে। তবে অনেকেই ইসরায়েলের নাগরিকত্ব প্রত্যাখ্যান করে এখনও সিরিয়াকে সমর্থন করে। তবে বছরের পর বছর ধরে একসঙ্গে বসবাস করায় ইসরায়েলিদের সঙ্গে তারা আরও ঘনিষ্ট হয়েছে।

এই হামলার আগে, ইসরায়েলের রকেট হামলায় হিজবুল্লাহর তিন যোদ্ধা নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। অবশ্য হামলাটি কোথায় হয়েছে, হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।

তবে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের বিমান বাহিনী লেবানন সীমান্তবর্তী কাফার কিলা গ্রামে হিজবুল্লাহর একটি অস্ত্র গুদাম লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।