আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে পুরো পশ্চিমবঙ্গে

আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে পুরো পশ্চিমবঙ্গে

ভারতের কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে এক নারী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতের এ ঘটনার প্রতিবাদে মাঠে নেমেছেন সাধারণ মানুষ। দ্রুতই এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে পুরো পশ্চিমবঙ্গে। শুধু তাই নয়, সেখান থেকে বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ‘দফা এক, দাবি এক, হাসিনার পদত্যাগ’ এর আদলে ‘দফা এক, দাবি এক, মমতার পদত্যাগ’ দাবি তোলা হচ্ছে।

শুরুতে নারী নিরাপত্তা ও বিচারের দাবিতে মধ্যরাতে রাস্তা দখলের আহ্বান জানিয়ে একটি প্রতীকী আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছিল। এটি সীমিত ছিল কলকাতার তিনটি জায়গায়। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় তা দ্রুত পুরো পশ্চিমবঙ্গে বিস্তৃত হতে শুরু করেছে। দলহীন ও পতাকাহীন এ আন্দোলনের আহ্বানে সাড়া দিচ্ছেন অনেক তৃণমূল নেতার পরিবারের নারী, আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠজনেরাও। যা নিয়ে চিন্তিত শাসকদল তৃণমূল।

হুগলির এক তৃণমূল বিধায়কের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী তার এলাকায় স্কুটি নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মধ্যরাতে রাস্তায় নামার আন্দোলনের প্রচার করেন। কিন্তু কলকাতা পৌরসভার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সোমা চৌধুরী ফেসবুকে অন্তত ১৪টি জায়গার জমায়েতের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘নারীদের সম্মান, প্রাণ বাঁচাতে দলবদ্ধ হন।’ কলকাতা পৌরসভার এক তৃণমূল কাউন্সিলরের স্ত্রীও মঙ্গলবার আরজি কর পর্যন্ত নাগরিক মিছিলে পা মিলিয়েছিলেন। মঙ্গলবারের নাগরিক মিছিলে ছিলেন সমাজকর্মী রত্নাবলী রায়, পিয়া চক্রবর্তী (অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী), মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়েরা।

আরজি কর হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে প্রথম যে পোস্টারটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে তাতে ১৪ আগস্ট (বুধবার) রাত ১১টা ৫৫ মিনিট থেকে মেয়েদের রাস্তায় নামার আহ্বান জানানো হয়েছিল। কিন্তু সোমবার রাত থেকেই সেটি অন্য মাত্রা পেতে শুরু করে। মঙ্গলবার তা পুরো পশ্চিমবঙ্গে ছড়িয়ে পড়েছে।

এদিকে, বামপন্থি রাজনীতিকরা মধ্যরাতে মেয়েদের রাস্তা দখলকে সরাসরি ‘রাজনৈতিক’ কর্মসূচি করার পক্ষে। যে কারণে সিপিএমের একটি অংশ লেখা শুরু করেছে, ‘আরজি কর-কাণ্ড যত তৃণমূলের মাথার দিকে ইঙ্গিত করছে, তত আন্দোলনকে অরাজনৈতিক করার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।’

সিপিএমের ছাত্র-যুব সংগঠন এসএফআই ও ডিওয়াইএইআই বুধবার মধ্যরাতে জমায়েতের ডাক দিয়েছে আরজি কর হাসপাতালের সামনে। সিপিএমের অন্য অংশ আবার চাইছে, নাগরিক আন্দোলনে দলের কর্মী-সমর্থকরা যাতে শামিল হন।

সিপিএমের কেউ কেউ আবার বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের স্লোগানকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সিপিএমের কেউ কেউ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিতে আগুন ধরানোর ফ্রেমের পাশে লিখেছেন, ‘দফা এক, দাবি এক, মমতার পদত্যাগ’। যেমন বাংলাদেশে লেখা হয়েছিল ‘দফা এক, দাবি এক, হাসিনার পদত্যাগ’।