ভারতীয় সব ব্র্যান্ডের লবণ ও চিনিতে মিললো মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি

ভারতীয় সব ব্র্যান্ডের লবণ ও চিনিতে মিললো মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি

ভারতের সব নামি ব্র্যান্ডের লবণ ও চিনির প্যাকেটে মাইক্রোপ্লাস্টিক তথা ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সবচেয়ে বেশি পরিমাণে প্লাস্টিককণা পাওয়া গেছে আয়োডিনযুক্ত লবণগুলোতে। গত মঙ্গলবার ‘লবণ ও চিনিতে মাইক্রোপ্লাস্টিক’ শিরোনামে প্রকাশিত ওই গবেষণা পরিচালনা করেছে টক্সিকস লিংক নামে একটি গবেষণা সংস্থা।

পরিবেশ গবেষণাসংক্রান্ত সংগঠন টক্সিকস লিংক স্থানীয় বাজার থেকে পাঁচ ধরনের চিনি ও ১০ ধরনের লবণ সংগ্রহ করেছিল।

নমুনা পরীক্ষা করে চিনি ও লবণের প্রতিটি প্যাকেটেই মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতির প্রমাণ পেয়েছে তারা। এর আকার 0.১ এমএম থেকে ৫ এমএম পর্যন্ত।

সমীক্ষায় আরো প্রকাশ করা হয়েছে, আয়োডিনযুক্ত লবণেই এই প্লাস্টিককণার উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি।  লবণের প্যাকেটগুলোর প্রতি কিলোগ্রামে ৬.৭১ থেকে ৮৯.১৫টি প্লাস্টিকের কণা মিলেছে।

এর মধ্যে আয়োডিনযুক্ত লবণে মিলেছে ৮৯.১৫টি প্লাস্টিককণা। চিনিতে প্রতি কিলোগ্রামে ১১.৮৫টি থেকে ৬৮.২৫টি প্লাস্টিককণা পাওয়া গেছে।

টক্সিকস লিংকের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক রবি আগরওয়াল বলেন, ‘আমাদের গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল মাইক্রোপ্লাস্টিকের বিদ্যমান বৈজ্ঞানিক ডাটাবেইসে অবদান রাখা, যাতে বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক চুক্তি একটি সুনির্দিষ্ট এবং ফোকাসড পদ্ধতিতে সমস্যার সমাধান করতে পারে।’

সহযোগী পরিচালক সতীশ সিনহা বলেন, ‘গবেষণায় সব লবণ এবং চিনির নমুনায় যথেষ্ট পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে, যা উদ্বেগজনক।

মানব স্বাস্থ্যের ওপর মাইক্রোপ্লাস্টিকের দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যগত পরিণতি সম্পর্কে জরুরি এবং ব্যাপক গবেষণার প্রয়োজন।’

মাইক্রোপ্লাস্টিক স্বাস্থ্য ও পরিবেশ, দুই ক্ষেত্রেই খুব উদ্বেগজনক। বিশ্বজুড়ে মাইক্রোপ্লাস্টিকের খারাপ প্রভাব নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলছে।

গবেষণায় বলা হচ্ছে, মাইক্রোপ্লাস্টিক থেকে নির্গত হয় ক্ষতিকারক রাসায়নিক, তাতে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা যায়। এই সমস্যাগুলোর অন্যতম হলো প্রজননগত সমস্যা, বিকাশগত সমস্যা ও ক্যান্সারের মতো ব্যাধি।

সাম্প্রতিক গবেষণায় ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড, এমনকি মায়ের দুধ এবং অনাগত শিশুর অঙ্গেও মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।

প্লাস্টিককণা স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ উভয়েরই ক্ষতি করতে পারে। এই ক্ষুদ্র কণাগুলো খাদ্য, পানি ও বাতাসের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে।