আরজি করের ধর্ষকের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে

আরজি করের ধর্ষকের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে

গায়ে টিশার্ট এবং জিন্স। হাতে হেলমেট। গলায় হেডফোন। নির্লিপ্ত মুখে আরজি কর হাসপাতালের করিডরে প্রবেশ করছেন অভিযুক্ত সিভিক ভলানটিয়ার। বিশেষ সূত্রের মারফত প্রকাশ্যে এসেছে সেই ফুটেজ।

ফুটেজে উল্লেখ করা তারিখ এবং সময় বলছে, সেই ফুটেজ ৯ অগস্ট ভোর ৪টা ৩ মিনিটের। তার কয়েক ঘণ্টা পরেই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয়েছিল ধর্ষণের পর হত্যার শিকার নারী চিকিৎসকের মবদেহ। 

সেই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ারকে। মনে করা হচ্ছে, ঘটনাস্থলে তার উপস্থিতির ‘প্রমাণ’ দিচ্ছে এই ফুটেজ।

পুলিশ বলছে, নির্যাতিতার মরদেহের কাছ থেকে উদ্ধার করে সংগ্রহ করা হয়েছিল হেডফোনের ছেঁড়া অংশ। সেই সূত্র ধরে কলকাতা পুলিশের ফোর্থ ব্যাটেলিয়নের ব্যারাক থেকে সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তদন্তকারীরা মনে করছেন, ফুটেজে অভিযুক্তের গলায় যে হেডফোন ঝুলছে, তারই ছেঁড়া অংশ মিলেছিল ঘটনাস্থলে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

সিবিআই সূত্রে জানা যায়, সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে ৮ আগস্ট রাতে একাধিকবার অভিযুক্ত ব্যক্তি হাসপাতালে ঢুকেছিলেন এবং বেরিয়েছিলেন। তার মধ্যে রাত ৮টায় বেরিয়ে তিনি গিয়েছিলেন চেতলার এক যৌনপল্লিতে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছিল, অতীতেও নারীদের সঙ্গে অভব্য ব্যবহার করার ‘রেকর্ড’ রয়েছে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের। এক নারী পুলিশকর্মীর সঙ্গে আপত্তিকর ভাষায় কথা বলেছিলেন তিনি।

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগের সেমিনার হল থেকে নারী চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ ওঠে, ধর্ষণ এবং খুন করা হয়েছে তাকে। সেই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় সিভিক ভলান্টিয়ারকে। তার পলিগ্রাফ পরীক্ষা করাতে চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিল সিবিআই। সেই নিয়ে শুক্রবার (২৩ আগস্ট) অনুমতি মিলেছে। 

উল্লেখ্য, কোনও ব্যক্তি কোনও নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে সত্যি কথা বলছে না, মিথ্যে কথা বলছে নাকি কোনও সত্যি গোপন করার চেষ্টা করছে তা জানতেই পলিগ্রাফ পরীক্ষা করা হয়।

সিবিআই মনে করছে, ঘটনার পর হাসপাতাল এবং সেমিনার রুমে যাওয়া নিয়ে বিভিন্ন বয়ানের মাধ্যমে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন সে অভিযুক্ত ব্যক্তি। মনে করা হচ্ছে, সেই কারণেই তার পলিগ্রাফ করাতে চাইছে সিবিআই। হেফাজতে থাকাকালীন বার বার বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। 

সিবিআই সূত্রে খবর, আরজি কর হাসপাতালে প্রবেশের কারণ, সময় নিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন অভিযুক্ত ব্যক্তি। সেমিনার হলে প্রবেশের কারণ নিয়েও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন তিনি। 

যদিও সিবিআইয়ের হাতে ঘটনার রাতের সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। তাতে অভিযুক্তকে চারতলায় আসতে এবং যেতে দেখা গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, বিভ্রান্তি কাটিয়ে সঠিক তথ্য উদ্ধার করতেই পলিগ্রাফ করতে চাইছেন তদন্তকারীরা।