ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় যুদ্ধবিরতি ও হামাসের হাতে জিম্মি ব্যক্তিদের বিষয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। খবর অনুসারে, গত বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাতে দেশটির নিরাপত্তাসংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ ঘটনা ঘটে।

ইসরায়েলের বেশ কিছু গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, নেতানিয়াহু এবং গ্যালান্টের মধ্যে তর্ক বাধে ফিলাডেলফি করিডোর থেকে ইসরায়েলি সেনা সরানো হবে কি না, এ নিয়ে। এই করিডোরটি গাজা এবং মিসরের সীমান্তে অবস্থিত, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৪ কিলোমিটার। বর্তমানে এটি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

তবে, গাজায় যুদ্ধবিরতির সময় এই করিডোরে সেনা মোতায়েন রাখা হবে কি না, তা নিয়ে হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে বিবাদ রয়েছে। হামাসের দাবি, যুদ্ধবিরতি চলাকালে সীমান্ত এলাকা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সরিয়ে নিতে হবে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে নেতানিয়াহু একটি ম্যাপ দেখিয়ে বলেন, মন্ত্রিসভার অনুমোদন সাপেক্ষে তিনি ফিলাডেলফি করিডরে ইসরাইলি সেনা মোতায়েন করে রাখতে চান। তখন গ্যালান্ত বলেন, এতে হামাস একমত হবে না। ফলে তারা কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে যাবে না। এমনকি জিম্মি ব্যক্তিদের মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনাও নষ্ট হয়ে যাবে।

বিষয়টি নিয়ে নেতানিয়াহু ও গ্যালান্তের মধ্যে বেশ কিছু সময় উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় চলে। একপর্যায়ে গ্যালান্ট ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রীই যেহেতু সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তিনি হয়তো জিম্মিদের মৃত্যুর বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। এখানে ৩০ জন মানুষের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

পরবর্তীতে, নেতানিয়াহুর উপস্থাপিত ম্যাপের অনুমোদনের জন্য ভোটাভুটি হয়। এতে আটটি ভোট নেতানিয়াহুর পক্ষে পড়ে, শুধু গ্যালান্টের ভোটটি বিপক্ষে যায়। ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গভির ভোটদানে বিরত থাকেন।

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালিয়ে ১২০০ মানুষকে হত্যা করে হামাস। এছাড়াও ২৫০ জনেরও বেশি মানুষকে জিম্মি করে নিয়ে যায় তারা। এরপর থেকে গাজায় ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় এখন পর্যন্ত ৪০ হাজার ৬৯১ জন নিহত হয়েছেন। এই সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য হামাস ও ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।