টাইফুন ইয়াগির আঘাতে ভিয়েতনামে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩৩, নিখোঁজ শতাধিক

ভিয়েতনামে সুপার টাইফুন ইয়াগি ও এর কারণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ৮০০ জনেরও বেশি এবং নিখোঁজ ১০৩ জন।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।

হ্যানয়ে রেড নদীতে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখনও অনেক এলাকা তলিয়ে আছে।

গত শনিবার স্থলভাগে আঘাত হানে টাইফুন ইয়াগি। এক সপ্তাহের ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে বিশেষ করে ভিয়েতনামের পার্বত্য উত্তরাঞ্চলে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে উদ্ধারকর্মীরা।

দেশটির লাও কাই প্রদেশে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার আকস্মিক বন্যায় প্রদেশটির লাং নু গ্রাম পুরো তলিয়ে গেছে।

শুক্রবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ভিএনএক্সপ্রেস সংবাদপত্র জানায়, লাং নু থেকে ৪৮ জনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে এবং আরও ৩৯ জন নিখোঁজ রয়েছে। গ্রামটিতে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় উদ্ধারকার্য চালাতে ভারী সরঞ্জাম আনা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। প্রায় ৫০০ উদ্ধারকর্মী গ্রামটিতে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিন প্রতিশ্রুতি দেন, ‘তারা নিখোঁজদের সন্ধানে পিছপা হবেন না।’

চীনের সীমান্তবর্তী আরেক উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ কাও বাংয়ে ভূমিধসের চার দিন পর শুক্রবার পর্যন্ত ২১ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ১০ জন।

সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ জানায়, টাইফুন ও এর ফলে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোতে বৈদ্যুতিক গাড়ি কোম্পানি ভিনফাস্ট, অ্যাপলের যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

টাইফুন ইয়াগিতে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অস্ট্রেলিয়া এরই মধ্যে ২০ লাখ ডলার সহায়তার অংশ হিসেবে মানবিক ত্রাণ সরবরাহ শুরু করেছে। অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়াও ২ মিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। শুক্রবার মার্কিন দূতাবাস জানায়, ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট বা ইউএসএআইডির মাধ্যমে ১ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়া হবে।

কয়েক দশকের মধ্যে ভিয়েতনামে আঘাত হানা টাইফুনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ইয়াগি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের পানির উষ্ণতা বাড়তে থাকায় টাইফুন ইয়াগির মতো ঝড় আরও শক্তিশালী হচ্ছে। যার প্রভাবে তীব্র বাতাস এবং ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে।