ভারতীয় প্রমাণ না করতে পারলেই পাঠানো হবে বাংলাদেশে: আসামের মুখ্যমন্ত্রী

হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। ফাইল ছবি।

বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ঝাড়খণ্ডে গিয়ে সম্প্রতি অনুপ্রবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি দাবি করেছিলেন, বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঝাড়খণ্ডের জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে সাঁওতাল পরগনা এবং কোলহান অঞ্চলের জনসংখ্যার দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। উপজাতী জনসংখ্যা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। এর জন্য তিনি ঝাড়খণ্ডের বর্তমান রাজ্য সরকারকে দায়ী করেছিলেন। তার ওই বক্তব্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।

এবার ঝাড়খণ্ডের জনসংখ্যার সমস্যা উল্লেখ করে এনআরসি করা হবে বলে বার্তা দিলেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী তথা ঝাড়খণ্ডে বিজেপির নির্বাচনী ইনচার্জ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঝাড়খণ্ডের জনসংখ্যার সমস্যার কথা উল্লেখ করে হিমন্ত শর্মা বলেছেন, ‘এনআরসি করা হবে। যাদের নাম এনআরসিতে থাকবে না আমরা তাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেব।’

শুক্রবার হাজারীবাগে ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এটি হবে আমাদের নীতি। এনআরসি হয়ে গেলে প্রত্যেকেই তাদের পক্ষ উপস্থাপনের সুযোগ পাবেন। এনআরসি প্রক্রিয়া চলাকালীন কর্তৃপক্ষ সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করবে এবং যদি কেউ প্রমাণ করতে না পারেন যে তিনি একজন ভারতীয় নাগরিক, তবে আমরা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আইনি পথেই বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেব।’

আসামের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, যে আসামে এক দফা এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। তাতে ১৪ লাখ মানুষকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টকে অনুরোধ করা হয়েছে যাতে তা সংশোধন করা যায়। যদি সুপ্রিম কোর্ট থেকে দ্বিতীয় সংশোধনের অনুমতি দেয়, তাহলে সেই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে তিনি দাবি করেন।

উল্লেখ্য, ঝাড়খণ্ডে অনুপ্রবেশ নিয়ে নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঝাড়খণ্ডের জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে সাঁওতাল পরগনা এবং কোলহান অঞ্চলের জনসংখ্যার দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। 

মোদি আরও অভিযোগ তোলেন, রাজনৈতিক স্বার্থে জেএমএম নেতৃত্বাধীন জোট অনুপ্রবেশকে সমর্থন করছে। তিনি বলেছিলেন, রাজ্য সরকার তোষণের রাজনীতি করছে। বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ফলে স্থানীয় মানুষরা সমস্যায় পড়ছেন। অনুপ্রবেশকারীরা পঞ্চায়েতগুলোতে জায়গা দখল করে নিচ্ছে, জমি দখল করছে, নৃশংসতায় লিপ্ত হচ্ছে। রাজ্যের বাসিন্দারা নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছেন।

তিনি জেএমএম, আরজেডি এবং কংগ্রেসকে ঝাড়খণ্ডের মানুষের ‘সবচেয়ে বড় শত্রু’ হিসাবে চিহ্নিত করেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, তারা ক্ষমতার লোভে ঝাড়খণ্ডের মানুষের ক্ষতি করছেন। তারপরেই হিমন্তের এমন মন্তব্য সামনে এলো।