মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল ড্র হলে কী হবে?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল ড্র হলে কী হবে?

প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে সরগরম আমেরিকা। একদিকে কমলা হ্যারিস। অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প। শেষ হাসি কে হাসবেন, এই প্রশ্ন তো আছেই। কিন্তু তারচেয়েও বড় প্রশ্ন হল নির্বাচন যদি ড্র হয়, তাহলে কী হবে?

যদিও এমন সম্ভাবনা খুবই কম, তবে একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এমনকি খোদ মার্কিনিরাও বিষয়টা নিয়ে যথেষ্ট অস্বস্তিতে।

আমেরিকার নির্বাচনী ব্যবস্থায়, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মার্কিন নাগরিকরা সরাসরি ভোট দেন না। তারা ভোট দেন পরোক্ষভাবে। মার্কিন মুলুকে ৫৩৮ সদস্যের ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ রয়েছে। প্রতিটি রাজ্য কংগ্রেসে তাদের প্রতিনিধিত্ব অনুযায়ী ‘ইলেক্টর’ পায়।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ম্যাজিক ফিগার হল ২৭০। এখন ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কমলা হ্যারিস, দু’জনেই যদি ২৭০-এর গণ্ডী টপকাতে না পারেন, তাহলে মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, সিদ্ধান্ত নেবে কংগ্রেস। এ অবস্থায় নবনির্বাচিত হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবে। সেনেট মনোনীত করবে পরবর্তী ভাইস প্রেসিডেন্টকে।

বেশ কয়েকটি পরিস্থিতিতে ইলেক্টোরাল কলেজ ২৬৯-২৬৯-এ ভাগ হয়ে যেতে পারে। ধরা যাক, ডেমোক্র্যাট কমলা হ্যারিস উইসকনসিন, মিশিগান এবং পেনসিলভানিয়া রাজ্যে প্রাধান্য পেলেন আর রিপাবলিকান প্রার্থী তথা প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জিয়া, অ্যারিজোনা, নেভাদা এবং উত্তর ক্যারোলিনায়। সঙ্গে বাম ঘেঁষা নেব্রাস্কায়। তাহলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

শেষবার আমেরিকার ইতিহাসে এমন ঘটনা ঘটেছিল প্রায় ২০০ বছর আগে। ১৮০০ সালে। সেবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছিলেন থমাস জেফারসন এবং জন অ্যাডামস। আইনপ্রণেতারা প্রেসিডেন্ট বাছতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে যান। শেষ পর্যন্ত হাউজ ভোটে ৩৬ তম ব্যালটে নির্বাচিত হন জেফারসন।

ঘটনার চার বছর পর সংবিধানে ১২ তম সংশোধনী এনে নির্বাচনী প্রক্রিয়া কিছু সহজ করার চেষ্টা করা হয়। এবার যদি ফের হাউজ ভোটের প্রয়োজন হয়, তাহলে সেটা হবে ২০২৫ সালের ৬ জানুয়ারি। সেই ভোট কীভাবে হবে?

কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিস অনুযায়ী, প্রতিটি রাজ্য জনসংখ্যা অনুযায়ী একটি কন্টিঞ্জেন্ট নির্বাচনে একটি ভোট দেবে। সহজভাবে বললে, ৫ লাখ জনসংখ্যার রিপাবলিকান প্রভাবিত ওয়াইমিং শহর এবং ডেমোক্র্যাটিক অধুষ্যিত ৩৯ মিলিয়ন জনগোষ্ঠীর ক্যালিফোর্নিয়ার একই প্রভাব থাকবে। আবার রাজধানী ওয়াশিংটনের তিনটি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট রয়েছে। কিন্তু এটা রাজ্য নয়। ফলে কন্টিঞ্জেন্ট নির্বাচনে ভোট দিতে পারবে না।

সিআরএস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই বা তার বেশি প্রতিনিধি রয়েছে এমন রাজ্যগুলিকে অভ্যন্তরীন ভোট করাতে হবে, যাতে তারা কোনো প্রার্থীকে সমর্থন করবেন, তা নির্ধারণ করা যায়। এ ক্ষেত্রে একজন প্রার্থী যদি ৫০টি রাজ্যের মধ্যে ২৬টি ভোট পান, তাহলে তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবেন। এমনটা হলে রিপাবলিকানদের সুবিধা হবে বলে মনে করছেন অনেকেই।