দ. কোরিয়ায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা

দ. কোরিয়ায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা

জরুরি ভিত্তিতে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল সামরিক আইন জারি করার পর দক্ষিণ কোরিয়ায় সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মঙ্গলবার দেশটির সামরিক আইনবিষয়ক কমান্ডার পার্ক আন-সু এক বিবৃতিতে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন।

বিবৃতিতে পার্ক আন-সু বলেছেন, ‘‘দক্ষিণ কোরিয়ায় সমস্ত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং দেশের সকল গণমাধ্যম সরকারি পর্যবেক্ষণের আওতায় থাকবে।’’

তিনি বলেন, ‘‘জাতীয় সংসদ, স্থানীয় কাউন্সিল, রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক দল সংশ্লিষ্ট সংস্থার পাশাপাশি সমাবেশ ও বিক্ষোভসহ সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দেশের সকল গণমাধ্যম এবং প্রকাশনা সামরিক আইন কমান্ডের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।’’

বিবৃতিতে দক্ষিণ কোরিয়ার এই মার্শাল ল কমান্ডার বলেছেন, উদার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে উৎখাত বা অস্বীকার করার চেষ্টা কিংবা ভুয়া খবরের প্রচার, জনমতের বিকৃতি বা মিথ্যা প্রচারও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

যে কোনও ধরনের শ্রমিক ধর্মঘট এবং রাষ্ট্রীয় কাজের গতিকে মন্থর এমন কর্মকাণ্ড কিংবা সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী সমাবেশ পরবর্তী নির্দেশ জারি না করা পর্যন্ত নিষিদ্ধ থাকবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, বর্তমানে ধর্মঘটে থাকা চিকিৎসকরাসহ স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের অবশ্যই আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কাজে ফিরতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে তাদের শাস্তির ঝুঁকি নিতে হবে। এই ঘোষণার লঙ্ঘনকারীরা বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার, আটক এবং তল্লাশির শিকার হতে পারেন।

এর আগে, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় গভীর রাতে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া আকস্মিক এক ভাষণে দক্ষিণ কোরিয়ায় জরুরি ভিত্তিতে সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল। উত্তর কোরিয়াপন্থি কমিউনিস্ট বাহিনীর হাত থেকে দেশ রক্ষায় সামরিক আইন জারির এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

আকস্মিক সামরিক আইন জারির ঘোষণায় দক্ষিণ কোরিয়াজুড়ে মানুষের মাঝে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। দেশটির ইতিহাসের গোড়ার দিকে একাধিক কর্তৃত্ববাদী নেতা এই পথে হেঁটেছিলেন। তবে ১৯৮০’র দশক থেকে গণতান্ত্রিক পথে যাত্রা করে দেশটি। সম্প্রতি মার্কিন ডলারের বিপরীতে দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রা ওনের মানের ব্যাপক পতন ঘটেছে; যা নিয়ে চাপের মুখে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল।

দক্ষিণ কোরিয়ার এই প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘আমি উত্তরের কমিউনিস্ট শক্তির হুমকি থেকে মুক্ত কোরিয়ার প্রজাতন্ত্র রক্ষা, জনগণের স্বাধীনতা ও সুখ লুণ্ঠনকারী ঘৃণ্য উত্তর কোরিয়াপন্থী রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিগুলোকে নির্মূল এবং স্বাধীন সাংবিধানিক সুরক্ষার জন্য সামরিক আইন ঘোষণা করছি।’’

তবে এই বিষয়ে কী ধরনের সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা ভাষণে বলেননি তিনি। দক্ষিণের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ বলেছে, পার্লামেন্ট ভবনের প্রবেশপথ আটকে দেওয়া হয়েছে। সেখানে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে।