দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে সামরিক আইন জারি করেছেন। ১৯৮০ সালের পর এই প্রথম দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করা হলো।

মঙ্গলবার গভীর রাতে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল ওয়াইটিএনে দেওয়া জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে এই ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।

টেলিভিশন ভাষণে তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট শক্তির হুমকি এবং রাষ্ট্রবিরোধী উপাদানগুলোকে নির্মূল করতে একটি উদার ও গণতান্ত্রিক দক্ষিণ কোরিয়া পুনর্গঠন করব। জনগণের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং রাষ্ট্রের স্থায়িত্ব বজায় রাখতে এটি একটি অনিবার্য পদক্ষেপ।

প্রেসিডেন্ট ইউন বলেন, জনগণের জীবন-জীবিকার তোয়াক্কা না করে বিরোধী দল কেবল অভিশংসন, বিশেষ তদন্ত এবং তাদের নেতাকে বিচার থেকে রক্ষা করার জন্য শাসন ব্যবস্থাকে পঙ্গু করে দিয়েছে।

ইউন বলেন, আমাদের পার্লামেন্ট এখন অপরাধীদের জন্য আশ্রয়স্থল হয়ে গেছে। এটি একটি আইন প্রণয়নের স্বৈরতান্ত্রিক কেন্দ্র হয়ে উঠেছে, যা আমাদের উদার গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা উল্টে দেওয়ার চেষ্টা করছে। মাদক অপরাধ মোকাবিলা এবং জননিরাপত্তা বজায় রাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোর বাজেট কাটছাঁট করে দেশকে মাদকের অভয়ারণ্য এবং জননিরাপত্তাহীনতার অবস্থায় পরিণত করা হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ইউন বিরোধী আইনপ্রণেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, তারা রাষ্ট্রের প্রধান কার্যক্রমের জন্য অপরিহার্য সব বাজেট ছেঁটে ফেলেছেন। তিনি বলেন, আমি যত দ্রুত সম্ভব রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি নির্মূল করে দেশকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনব।

অন্যদিকে ইয়োনহাপ নিউজ এজেন্সি দেশটির সামরিক বাহিনীকে উদ্ধৃত করে বলেছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় সংসদ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হবে ও মিডিয়া এবং প্রকাশকরা সামরিক আইনের কমান্ডের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক আইন জারির বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে হোয়াইট হাউস সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিরোধী-নিয়ন্ত্রিত সংসদের সঙ্গে ইউনের মতবিরোধ চলে আসছে। বিরোধী ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং শাসক পিপল পাওয়ার পার্টির মধ্যে আগামী বছরের বাজেট বিল নিয়ে চলমান অচলাবস্থা আরও উত্তেজনা তৈরি করেছে।