জেলেনস্কিকে ‘পূর্ণ সমর্থন’ স্টারমারের, বললেন— ইউক্রেনের সঙ্গে আছি

জেলেনস্কিকে ‘পূর্ণ সমর্থন’ স্টারমারের, বললেন— ইউক্রেনের সঙ্গে আছি

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার লন্ডনে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সরকারি দপ্তর ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে স্টারমার ইউক্রেনের প্রতি ‘পূর্ণ সমর্থন’ জানান।

ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে তিনি বলেন, আমরা আপনার ও ইউক্রেনের সঙ্গে আছি। রোববার (২ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

মূলত ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে দেশটির ইউরোপীয় মিত্রদের সম্মেলনের আগে লন্ডনে বৈঠক করলেন এই দুই নেতা। সেখানেই জেলেনস্কিকে ‘পূর্ণ সমর্থন’ জানান স্টারমার। ওয়াশিংটনে গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে বৈঠকে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পর লন্ডনে যান জেলেনস্কি। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে হোয়াইট হাউসের উত্তপ্ত সেই বৈঠকের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, তিনি খুশি যে— তার দেশের “এমন বন্ধু” আছে।

এদিকে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে সহায়তা দিতে ২৮৪ কোটি ডলারের একটি ঋণ চুক্তি সম্পাদন করেছে যুক্তরাজ্য ও ইউক্রেন। রাশিয়ার আটকে রাখা সম্পদগুলোর লাভের অর্থ দিয়ে এই ঋণ পরিশোধ করা হবে।

শনিবার জেলেনস্কির গাড়িবহর ডাউনিং স্ট্রিটে পৌঁছালে তার সমর্থকরা উল্লাস প্রকাশ করেন এবং সেখানে স্টারমার তাকে আলিঙ্গন করেন এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি আবাসস্থলে প্রবেশের আগে তারা ছবি তোলেন। সেখানে স্টারমার প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে বলেন, “আপনাকে এখানে, এই ডাউনিং স্ট্রিটে অনেক অনেক স্বাগতম”।

তিনি আরও বলেন, “যেমনটি আপনি বাইরে রাস্তায় উল্লাস ধ্বনি শুনছেন, গোটা যুক্তরাজ্যজুড়ে আপনার প্রতি পূর্ণ সমর্থন রয়েছে এবং যতদিনই লাগুক আমরা আপনার সঙ্গে, ইউক্রেনের সঙ্গে রয়েছি।”

কিয়ার স্টারমার বলেন: “যতদিনই সময় লাগুক না কেন আমরা আপনার এবং ইউক্রেনের সাথে আছি।”

জবাবে জেলেনস্কি বলেন: “(রাস্তায়) আমি অনেক লোককে দেখেছি এবং আমি আপনাকে এবং যুক্তরাজ্যের জনগণকে  ধন্যবাদ জানাতে চাই (এই যুদ্ধের শুরু থেকেই) এত ব্যাপক সমর্থনের জন্য।”

রোববার রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে জেলেনস্কির। স্টারমার ও জেলেনস্কি প্রায় ৭৫ মিনিটের মতো রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন এবং জেলেনস্কিকে গাড়িতে তুলে দেওয়ার সময় স্টারমার আবার তাকে আলিঙ্গন করেন।

এর আগে গত শুক্রবার গণমাধ্যমের সামনেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে শনিবার জেলেনস্কি অনেকটা জোর দিয়েই বলেন, আগের দিন তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা সত্ত্বেও ইউক্রেনের জন্য ট্রাম্পের সমর্থন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এই মতপার্থক্যে কিয়েভের ইউরোপীয় মিত্ররা আরও বিস্মিত হয়েছে এবং এই যুদ্ধের ব্যাপারে ওয়াশিংটনের নতুন অবস্থানের সঙ্গে তারা খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে।

এছাড়া কিয়েভের “রেয়ার খনিজ” সম্পর্কে কোনও চুক্তি স্বাক্ষর না করেই জেলেনস্কিহোয়াইট হাউস ত্যাগ করলেও তিনি জোর দিয়েই বলেন, “নিরাপত্তা নিশ্চয়তার প্রথম ধাপ হিসেবে” তিনি এখনও এটি স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত আছেন।

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, “প্রসিডেন্ট ট্রাম্পের সমর্থন পাওয়া আমাদের জন্য খুবই জরুরি। তিনি যুদ্ধ শেষ করতে চান, কিন্তু আমাদের চাইতে বেশি করে শান্তি আর কেউ চায় না”।

প্রসঙ্গত, রোববার জেলেনস্কি কিয়েভের ইউরোপীয় সমর্থকদের সঙ্গে একটি জরুরি আলোচনায় যোগ দেবেন যেখানে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও উপস্থিত থাকবেন।