পাকিস্তানে ট্রেন ছিনতাই: জিম্মি সংকটের অবসান, ঝরল ২১ বেসামরিক প্রাণ

পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের বোলান জেলায় ছিনতাই হওয়া ট্রেনটি উদ্ধারে ৩০ ঘণ্টার অভিযান শেষ হয়েছে। স্থানীয় সময় বুধবার (১২ মার্চ) রাতে শতাধিক জিম্মিকে মুক্তির মধ্য দিয়ে অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করেছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। এ ঘটনায় ২১ জন বেসামরিক ও চার সেনা নিহত হয়েছেন বলে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

পৃথক আরেক বিবৃতিতে ট্রেনটি উদ্ধার ও সব যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী ও তথ্যমন্ত্রী আত্তা তারার।-খবর ডন ও এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের

লেফটেন্যান্ট জেনারেল শরীফ তার বক্তব্যে জানান, মাশকাফ টানেলের কাছে আটকে থাকা ট্রেনটি থেকে অবশিষ্ট সব যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানে ৩৩ ‘সন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছে বলে জানান তিনি।

ট্রেনটিতে প্রায় ৪৪০ জন যাত্রী থাকার কথা উল্লেখ করলেও কতোজন জিম্মিকে উদ্ধার করা হয়েছে তা নির্দিষ্ট করে জানাননি তিনি।

তবে নিরাপত্তা বাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ডনকে জানান, উদ্ধার অভিযান কয়েক পর্বে ভাগ করে পরিচালনা করা হয়েছিল। প্রথম পর্বে শতাধিক যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়, পরে আরও ৮০ যাত্রীকে উদ্ধারের পর মাখ শহরে সরিয়ে নেওয়া হয়।

প্রায় এক ডজনের মতো যাত্রী ও দুই রেলওয়ে পুলিশ অপহরণকারীদের হাত থেকে পালিয়ে নিরাপদে বেলুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটায় ফিরতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানা যায়।

আইএসপিআরের ডিজি পাকিস্তানি গণমাধ্যম দুনিয়া নিউজকে জানান, সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, ফ্রন্টিয়ার কর্পস ও এসএসজির সেনারা এই অভিযানে অংশ নিয়েছেন।

তিনি জানান, সড়কপথে যোগাযোগ ও জনবসতি থেকে অনেক দূরের এলাকায় ঘটনাটি ঘটার কারণে সেখানে পৌঁছানো অনেক কঠিন ছিল। ছিনতাইকারীরা নারী ও শিশুদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছেন বলেও জানান তিনি।

নিরাপত্তা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন এক কর্মকতা জানান, এএসজি কমান্ডো অতি সতর্কতার সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে জিম্মিকারী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পরাজিত করে ৬৮ জন জিম্মিকে মুক্ত করে।

তিনি জানান, প্রায় সব অভিযান সম্পন্ন হয়েছে আর নিরাপত্তা বাহিনী এখন অভিযানের সমাপ্তি পর্বে রয়েছে।

এর আগে, মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকালে স্থানীয় গুদালার ও পিরু কোনেরি এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় পাকিস্তানের কোয়েটা থেকে পেশওয়ারমুখী জাফর এক্সপ্রেস নামের একটি ট্রেনের প্রায় ৫০০ যাত্রীকে জিম্মি করে দেশটির বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। তাদের দাবি না মানা হলে সব জিম্মিকে হত্যা করা হবে বলেও হুমকি দেয় তারা।

পরে জিম্মিদের উদ্ধারে অভিযান শুরু করে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।