ভারতের নাগপুরে হিন্দু-মুসলমান সহিংসতা, কারফিউ জারি
ভারতের মহারাষ্ট্রের নাগপুর শহরের বিভিন্ন এলাকায় সোমবার রাত থেকে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে সংঘর্ষ চলেছে। ব্যাপক পাথর ছোঁড়াছুঁড়ি, দোকান ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ব্যবহার করে। পরে কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, নাগপুর শহরের মহাল এলাকায় সোমবার সন্ধ্যায় সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশের দিকেও ব্যাপক পাথর ছোঁড়া হয়।
প্রাথমিকভাবে ছয়জন বেসামরিক নাগরিক ও তিনজন পুলিশ অফিসার আহত হন বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থাটি।
এরপরে কোতোয়ালি আর গণেশপেঠ এলাকাতেও সংঘর্ষ ছড়ায়। হাজার খানেক মানুষ ব্যাপকভাবে পাথর ছোঁড়া, ভাঙচুর চালায়। দোকানপাট আর গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার প্রায় ভোররাত পর্যন্ত পুলিশ নানা এলাকায় চিরুনি তল্লাশি চালিয়ে ২০ জনকে আটক করেছিল।
বেলা দশটা নাগাদ মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র দফতরের রাষ্ট্র মন্ত্রী যোগেশ কদম সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, সহিংসতার কারণ এখনও খুঁজে বার করা যায়নি। এখনও পর্যন্ত ৪৭ জনকে আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। যদিও কারফিউ জারি আছে সেখানে।
যে অঞ্চলে সংঘর্ষ ছড়িয়েছিল, সেই মহাল অঞ্চল ছাড়া শহরের অন্যান্য এলাকায় জনজীবন স্বাভাবিকই আছে বলে স্থানীয় সাংবাদিকরা জানাচ্ছেন।
তবে পুলিশ নাগরিকদের প্রতি আবেদন জানিয়েছে যাতে প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে না বের হন। যেসব এলাকায় সোমবার রাত থেকে সংঘর্ষ ছড়িয়েছে, সেটি হিন্দু পুণরুত্থানবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএসের মূল কার্যালয়ের একেবারেই কাছে। আবার মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডনবিশের বাড়িও নাগপুরেই।
সোমবার দুপুরে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের কবর সরিয়ে দেওয়ার দাবিতে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বজরং দল নাগপুরের মহাল এলাকায় একটি বিক্ষোভ জমায়েত করে। ওই বিক্ষোভে আওরঙ্গজেবের একটি ছবি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
মহারাষ্ট্রের ছত্রপতি সম্ভাজিনগর জেলায় অবস্থিত খুলদাবাদ থেকে আওরঙ্গজেবের কবর সরিয়ে দেওয়ার দাবিতে রাজ্যের নানা জায়গায় বিক্ষোভ হয়।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডনবীশ বলেছেন যে আওরঙ্গজেবের ওপরে মানুষের ক্ষোভের উৎস হলো বলিউডের ছবি 'ছাভা'।
মঙ্গলবার মহারাষ্ট্র বিধানসভায় মি. ফডনবীশ বলেছেন, ছাভা সিনেমাটাই আওরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে মানুষকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছে।