ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে ইসরায়েলের হামলা, তেহরানেরও পাল্টা জবাব
দুদিন ধরে পাল্টাপাল্টি সংঘাতের পর ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। রবিবার (১৫ জুন) ভোরে ইরানে ফের হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। তার কিছু সময় পর ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইসরায়েলকে পাল্টা জবাব দিয়েছে ইরান।
আজ (রবিবার) সকাল না হতেই ইরানের জ্বালানি খাত এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরকে সরাসরি লক্ষ্যবস্তু করে ইসরায়েল। এর পরপরই, তেহরান নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়, যাতে উত্তর ইসরায়েলের অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন বলে ইসরায়েলের জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এপির খবরে বলা হয়েছে।
তবে একাধিক ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ও জরুরি সেবা সংস্থার বরাত দিয়ে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ভোরে দুই দফায় ইসরায়েলের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। এতে অন্তত ছয় ইসরায়েলি নিহত হয়েছে।
প্রথম হামলায় উত্তর ইসরায়েলের হাইফার কাছে একটি আবাসিক এলাকায় ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো।
অন্যদিকে, রাজধানী তেল আবিবে চালানো আরেক দফা হামলায় ৬০ বছর বয়সী এক নারী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির জরুরি সেবা সংস্থা মাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ)। ওই এলাকায় আরও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
এছাড়া জুদিয়ান ফুৎহিলস অঞ্চলে আরও কমপক্ষে ২৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন এমডিএর এক মুখপাত্র। তবে এই দাবিগুলোর কোনোটি এখন পর্যন্ত যাচাই করতে পারেনি বিবিসি।
ইরানের আধাসামরিক বাহিনী রেভল্যুশনারি গার্ড (আইআরজিসি) দাবি করেছে, তাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলোর জ্বালানি উৎপাদনকেন্দ্র। তবে ইসরায়েল এই দাবি স্বীকার করেনি।
অপরদিকে, ইরানে ঠিক কতজন হতাহত হয়েছেন, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা তেহরানে ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর এবং দেশটির পরমাণু কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত স্থাপনাগুলো লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে।
রবিবার শেষ রাতের দিকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাওয়ার পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন উভয়েই ইরানের সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর নিশ্চিত করে। সেই সময়ই জরুরি বৈঠকে বসে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা।
চলমান সংঘাতের মধ্যেই তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার পূর্বনির্ধারিত আলোচনা বাতিল হয়েছে। ফলে এই লড়াইয়ের শেষ কোথায় এবং কীভাবে তা ঘটবে—এ নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ‘তেহরান জ্বলছে।’
ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার মুখে ইরানের নেতৃত্বের সামনে এখন কঠিন সিদ্ধান্ত—তারা কি আরও গভীর সংঘাতে জড়াবে, নাকি কূটনৈতিক পথ খুঁজবে।